গাজীপুরে পরকীয়ার জেরে গৃহবধূকে নির্মমভাবে হত্যা

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক গৃহধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের দাবি, পরকীয়ার জের ধরে ওই গৃহবধূকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তার স্বামীর পরিবার। এ ঘটনার পর শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন নিহতের পরিবার। মামলায় পুলিশ নিহত গৃহবধূর শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করলেও স্বামীসহ পরিবারের অপর সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।

বিয়ের দেড় বছরের মাথায় আদরের ধন মেয়েকে হারিয়ে শোকে মূহ্যমান নিহতের পরিবার। তারা চাইছেন, ঘাতকদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি। তবে পুলিশ বলছে, মামলা দায়েরের পর গৃহবধূর শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অপর আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিয়ে বাড়ির আলপনা এখনো বিবর্ণ হয়নি, নষ্ট হয়নি বৌভাত ও গায়ে হলুদের জন্য সাজানো কক্ষ। কিন্তু যার বিয়ে এত ধুমধামের সঙ্গে হয়েছিল শুধু সেই আদরের জেনিফার নেই। পরকীয়ার কারণে তাকে অকালে জীবন দিতে হয়েছে স্বামী ও তার পরিবারের হাতে, এমন দাবি এখন নিহতের স্বজনদের। মেয়ের এমন করুণ মৃত্যু মানতে পারছেন না তারা।
নিহত জেনিফারের বাবা এ্যান্তনী গোমেজ জানান, গত দেড় বছর আগে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী এলাকায় খ্রিষ্টীয় ধর্মমতে জেনিফা মনিকা গোমেজের সঙ্গে শ্রীপুরের দক্ষিণখন্ড এলাকার হিমেল গোমেজের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ওই দম্পতির ঘরে এক কন্যা সন্তানের জম্ম হয়।

তিনি দাবি করেন, বিয়ের পর মামীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের কারণে জেনিফার জীবনে নেমে আসে অত্যাচারের খড়গ। স্বামীর পরিবারে কথায় কথায় তার ওপর চলত মারপিট ও মানসিক নির্যাতন। জেনিফার মাধ্যমে এমন অনাচারের কথা প্রকাশ হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় তাকে দুনিয়া থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এরই জের ধরে গত ২৮ মার্চ তারিখে হিমেল পরিবারের পরস্পর যোগ সাজসে জেনিফারকে হত্যা করে মরদেহ গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।

মারা যাওয়ার আগে ২৭ মার্চ তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বাবার বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিল জেনিফার। কিন্তু স্বামীর বাঁধায় সেটি সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে নিহতের মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার আদরের দুলালীকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়।

সদা হাসোজ্জ্বল জেনিফারের এমন করুণ মৃত্যু মানতে পারছেন তার এলাকার মানুষ ও স্বজনরা। তারা চাইছেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি।

জেনিফার মারা যাওয়ার পরদিন স্বামী হিমেল গোমেজসহ পরিবারের তিন সদস্যের নামে মামলা করেছেন নিহতের বাবা এ্যান্তনী গোমেজ। মামলা দায়েরের পর নিহতের শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন মামলার অপর আসামিরা। বিষয়টি নিয়ে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারকে তার অফিসে পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর জানান, মামলার পলাতক আসামীদের ধরতে পুলিশ সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে। অতি দ্রæত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment